Manual6 Ad Code
জুলাই সনদকে অকার্যকর করতে জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চায় তারা- মিয়া গোলাম পরওয়ার
Manual4 Ad Code
এরা প্রথমত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই রাজি হয়নি। পরবর্তীতে অন্য সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য দেখে কৌশলগত কারণে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে একমত হলেও তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। এজন্য তারা গণভোটের পক্ষে মত দিলেও গণভোট আয়োজন নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে নানারকম ভ্রান্ত যুক্তি উপস্থাপন করছে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চাইলে তার আগে নভেম্বরে গণভোট হলে আপত্তি কেন জাতির সামনে স্পষ্ট করতে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এদেশের জনগণ বোকা নয়, জনগণকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আদেশ জারি করে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিতেই হবে।
Manual4 Ad Code
অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, যারা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চায় তারা জুলাই সনদকে অকার্যকর করতে চায়। তাদের খারাপ উদ্দেশ্য জাতি বুঝে গেছে। এরা প্রথমত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই রাজি হয়নি। পরবর্তীতে অন্য সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য দেখে কৌশলগত কারণে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে একমত হলেও তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। এজন্য তারা গণভোটের পক্ষে মত দিলেও গণভোট আয়োজন নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে নানারকম ভ্রান্ত যুক্তি উপস্থাপন করছে।
Manual8 Ad Code
 
Manual2 Ad Code
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চাইলে তার আগে নভেম্বরে গণভোট হলে আপত্তি কেন জাতির সামনে স্পষ্ট করতে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এদেশের জনগণ বোকা নয়, জনগণকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আদেশ জারি করে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিতেই হবে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার তাণ্ডবে সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, তিন দশক/চার দশক আগের ঘটনায় মিথ্যা মামলা সাজিয়ে বিচার হতে পারলে ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় প্রকৃত আসামীদের বিচার কেন হবে না? দ্রুত বিচার আইনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ২৮ অক্টোবরের ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের উত্থান শুরু। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে ইনসাফ ও ন্যায় বিচারের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দিল্লি বসে হাসিনা বাংলাদেশে নভেম্বরে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে তার আগেই হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ না করে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। তারা সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে নির্বাচনকে বিকর্তিক করার চেষ্টা করবে। জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে সরকারের ভেতরে বাহিরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে গোয়েন্দা বিভাগকে শক্তিশালী করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক দিন। এই দিনটি পল্টন ট্র্যাজেডি হিসেবে পরিচিত। ঐ দিন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করার আগে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ২৭ অক্টোবর রাতে হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীকে লগি-বৈঠা নিয়ে রাজপথে নেমে আসার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ১৪জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। পল্টনে জামায়াতের সমাবেশ শুরুর আগেই ২৮ অক্টোবর সকাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে সাপের মতো পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর তারা লাশের উপর নৃত্য করেছে। যেই দৃশ্য সারাবিশ্বের কোটি-কোটি মানুষকে ব্যথিত করেছে। ঐ ঘটনায় মামলা হলেও ঐ মামলা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বেআইনি ভাবে বাতিল করে দিয়েছিল। তিনি ঐ মামলা পুনরুজ্জীবিত করার দাবি জানিয়ে বলেন প্রকৃত অপরাধীদের অবশ্যই বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ বছর শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদের নেতৃত্ব দিয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সকল অপকর্মের সমান অপরাধী। তাই হাসিনাসহ ১৪ দলীয় নেতাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করে দেশ থেকে রাজনীতির নামে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
 
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন (ঢাকা -৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী), কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন (ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী), কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন (ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী), কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমদ (ঢাকা-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী), মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, এডভোকেট এস. এম কামাল উদ্দিন, আব্দুস সালাম, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন (ঢাকা -৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী), ড. মোবারক হোসেন (কুমিল্লা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী), কামরুল আহসান হাসান, শাহীন আহমেদ খান, মাওলানা শরিফুল ইসলাম। এছাড়াও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াত-শিবির সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে থেকে আওয়ামী লীগের অস্ত্রের মুখে দেশ রক্ষায় লড়াই করেছে। আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথ থেকে এক ইঞ্চি দূরেও সরে যায়নি। সেই ধারা অব্যাহত রেখে আজও জামায়াত- শিবির মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা রেখে আসছে। সেদিন বিএনপি যদি জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে একসাথে সন্ত্রাসী আওয়ামী গোষ্ঠীকে প্রতিহত করতে এগিয়ে আসতো তবে আধিপত্যদের দোসর আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৮ বছর জাতির ওপর জুলুম নির্যাতন করার সুযোগ পেতো না। তিনি হাসিনার নির্দেশে পরিচালিত সকল গণহত্যার মামলার কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, শাপলা চত্বরে পরিচালিত গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবারের মতো ২৮ অক্টোবরের শহীদদের পরিবারকেও রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহযোগিতা এবং সম্মাননা প্রদান করতে হবে।
সমাবেশ শেষে, বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে শুরু করে বিজয়নগর – কাকরাইল হয়ে শান্তিনগরের অভিমুখে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ছুটে যায়। মিছিলে হাজার-হাজার নেতাকর্মী ২৮ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে।