সিলেট মহানগর,
সওজ-সিসিক দ্ব ন্দ্বে বে হা ল সড়ক
♦ সিলেট মহানগরের ৫০ কিমি সড়ক নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের টানাটানি ♦ সওজ এনওসি না দেওয়ায় কাজ করতে পারছে না সিটি করপোরেশন ♦ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে
শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট
সিলেট মহানগরের ব্যস্ততম প্রশস্ত সড়কগুলোর দায়িত্ব সড়ক ও জনপথের (সওজ)। কিন্তু এসব সড়কের ব্যাপারে বড়ই ‘বেখেয়াল’ কর্তৃপক্ষ। খানাখন্দে বেহাল হলেও সওজের কিছু যায় আসে না। বিপর্যস্ত সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলতে চলতে নগরবাসী ‘গালমন্দ’ করে সিলেট সিটি করপোরেশনকে (সিসিক)। আর সেই গালমন্দ থেকে বাঁচতে সওজের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) নিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ করে থাকে সিটি করপোরেশন। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চললেও এবার বেঁকে বসেছে সওজ। নিজেরাও বেহাল সড়কের কাজ করছে না, আবার কাজের জন্য সিসিককেও অনুমতি দিচ্ছে না। সড়ক নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের এই টানাটানির মধ্যে পড়ে নিত্য দিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, নগরবাসীর ক্ষোভ থেকে বাঁচতে তারা ‘দায়মুক্তি’র সাইনবোর্ড বসাবে সওজের সড়কে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিসিকের এলাকার ভিতর সওজের মালিকানাধীন প্রায় ৫৬ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর অর্ধেকের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে সিসিক। বিভিন্ন সময় সড়কগুলোর দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য সিসিক আবেদন জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করে সওজ। আবার সড়ক নষ্ট হলে সংস্কার করতেও রাজি হয় না তারা। সড়ক বেহাল হলেই মানুষের ক্ষোভ জন্মে সিসিকের ওপর। তাই বাধ্য হয়ে সিসিক সওজের কাছ থেকে এনওসি নিয়ে সড়কগুলো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি হাসিনা সরকার পতনের পর সড়কগুলো নিয়ে সওজ ও সিসিকের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। সিসিকের পক্ষ থেকে ফের সড়কের মালিকানা হস্তান্তরের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তাতে সম্মত হয়নি সওজ। এ নিয়ে টানাটানির একপর্যায়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিক্ততা শুরু হলে সিসিকে এনওসি দেওয়া বন্ধ করে দেয় সওজ। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর আম্বরখানা-বিমানবন্দর, আম্বরখানা-কুমারগাঁও, চৌহাট্টা-কুমারপাড়া-নাইওরপুল, নাইওরপুল-টিলাগড় ও ক্বিন ব্রিজ-হুমায়ূন রশিদ চত্বর সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ দুর্ভোগকে নিত্যসঙ্গী করেই চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলী আকবর জানান, নগরবাসীর স্বার্থে এত দিন এনওসি নিয়ে সড়কগুলো নিজেদের খরচে সিটি করপোরেশন সংস্কার করে দিয়েছে। এখন সওজ এনওসিও দিচ্ছে না, নিজেরাও সংস্কার করছে না। এ অবস্থায় নগরবাসীর ‘গালমন্দ’ থেকে বাঁচতে সওজের সড়কগুলোতে সাইনবোর্ড বসাবে। সাইনবোর্ডে লেখা থাকবে ‘এই সড়কের মালিক সওজ। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সওজের’। সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমীর হোসেন জানান, সিসিক সব সময় এনওসি নিয়ে সওজের সড়কগুলোতে কাজ করত। কাজ নিয়ে যে জটিলতা আছে সেটি হয়তো শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে।